বই কিনুন বই পড়ুন


বই পৃথিবীতে একমাত্র সঙ্গী যে কখনো কারও ক্ষতি করে না উপকার ছাড়া। একটা মানুষকে আমূল পরিবর্তন করতে যে জিনিসটা সর্বদা সাহায্য করে সে হলো বই। এই সহজ সরল কথাটা আজকাল কারও অজানা নয়। সকলেই এই বিষয়টা জানে এমন কি মনেপ্রাণে বিশ্বাসও করে। কিন্তু বাস্তব জীবনে আমল করার ক্ষেত্রে হিসাবের খাতাটা একেবারেই ভিন্ন। কেননা দেখা যায় প্রতি সপ্তাহে বা মাসে একটি বইও পড়ে শেষ করতে পারেনি অথবা শুরুই করেনি কারও কারও ক্ষেত্রে এক বছরেও না।
সময়টা এমন হয়েছে যে, একটু ফুসরত পেলেই ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি বিভিন্ন সামাজিক যোগযোগ মধ্যমে সময় কাটানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু একটা সময় এমন ছিল বই ছাড়া অন্য কোনো কিছু মানুষ ভাবতেই পারত না। অবসর কাটানোর উত্তম উপায় ছিল বই। কালের পরিক্রমায় সে চিত্রটা আজ ভিন্ন। কারণ হাতের কাছে আছে আমাদের প্রযুক্তি। যে প্রযুক্তিকে আমরা সামনে চলার পাথেয় হিসেবে জীবনের আদর্শ বলে গ্রহণ করেছি। সেই প্রযুক্তিই আজ নীরবে আমাদের নিয়ে যাচ্ছে পিছনের দিকে। তার অন্যতম উদাহরণ হলো আমাদের মাঝে গড়ে উঠেছে বই পড়ার প্রতি অনীহা।
যা আমাদের ভবিষ্যৎ সময়ের জন্য বড়ই হুমকির কারণ। বই পাঠ করা যে কি মজা! এই বিষয়টা যদি কারও মাঝে উপলব্ধি না হয় তবে তার দ্বারা আর কিছু হলেও বই পড়াটা সম্ভব নয়। বই তাকে জ্ঞান দেয় অজানাকে জানায় নিজের মাঝে এনে দেয় নতুনত্ব। নিজের মাঝে পাওয়া যায় আমূল পরিবর্তন। এই বিষয়গুলো তখনই তার মাঝে কাজ করবে যখন তার মাঝে থাকবে জ্ঞানের পিপাসা। তা না হলে কোনোদিন সম্ভব নয়। আর এই অভ্যাসটা ঘর থেকে শুরু করতে হবে। তবেই সম্ভব। না হলে খুবই কঠিন।
অথাৎ বাব-মা ভাই-বোন এই বিষয়টা নিয়ে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। আগে তাদের মাঝে এই অভ্যাসটা করাতে হবে। তবেই আজকের তরুণ প্রজন্ম তা দেখে দেখে শিখতে পারবে। একটি শিশু ছোট্ট সময় থেকে যদি দেখতে পায় যে তার পরিবারের প্রায় সবাই বই পড়ুয়া। তাহলে সে বইকে ভালোবাসতে বধ্য হবে। একটা সমাজ বা রাষ্ট্রকে সঠিক পথে পরিচালনার ক্ষেত্রে জ্ঞানী মানুষ ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আর তা একাডেমিক বই পড়ে এমনটা হওয়া একেবারেই বোকার স্বর্গে বাস করার মতো।
জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে হলে বাইরের জগত সম্পর্কে জানতে হবে। আর সে ক্ষেত্রে সিলেবাস বহির্ভূত হাজারটা বই পড়তে হবে। প্রতি মাসে অন্তত দুটি বই পড়ে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে কর্মব্যস্ত সময় সাজাতে হবে। বই পড়াকে নিজের মাঝে অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। তা হলেই গড়ে তোলা সম্ভব এটা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা।