ভাষা আন্দোলন বঙ্গবন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের সূচনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক এবং অভিন্ন। ভাষা আন্দোলন সংগঠিত করার ক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদান রয়েছে। বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির গণচেতনার সর্বপ্রথম বহির্প্রকাশ এবং স্বাধিকার আন্দোলনের এক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ ৫২-এর ভাষা আন্দোলন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়েও রয়েছে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
এই ভাষা আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছিল অপরিহার্য এক ভূমিকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদানের অধিকার আদায়ে যে বলিষ্ঠ সংগ্রামের সূচনা হয় তা মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ থেকেই।
প্রতিটি জাতির জীবনে এমন কিছু অবিসংবাদিত ঘটনা রয়েছে যা স্বমহিমায় দীপ্রমান। মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য রক্ত দিতে হয়েছিল বাংলাদেশের মানুষকে। মাতৃভাষাকে ভালোবেসে রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার দাবিতে যে দেশপ্রেমিক সন্তানেরা নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়েছিল এমন ঘটনা পৃথিবীতে বিরল। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিশ্বসভায় বাঙালিই প্রথম দেখাল এ অর্জনের পথ। শহীদের আত্মত্যাগের স্মৃতি আজ দেশের সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়ে গেছে ব্রহ্মময়।
মা বলে ডাকার অধিকার আদায় করতে বুকের তাজা রক্ত ঝরাতে হয়েছে। তাদের আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি, আমরা পেয়েছি প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। লড়াই করে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। বাঙালিই প্রথম দেখাল এ অর্জনের পথ। মহান ভাষা আন্দোলনে যে অবদান বাঙালি জাতি রেখেছিল তা আজ সমগ্র বিশ্ব শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে। এ যেন আমাদের গৌরবের মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সময়। এ যেন এক অন্যরকম অনুভূতি।
১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি দেশ স্বাধীন হয়। আবার পাকিস্তানের ছিল দুটি অংশÑ একটি পূর্ব পাকিস্তান, অন্যটি পশ্চিম পাকিস্তান। দুই ভূখ-ের মাঝে দূরত্ব প্রায় ১২০০ মাইল। তদুপরি বাংলার মানুষের ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, আচার-অনুষ্ঠান, রীতিনীতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। জন্মের ছয় মাস যেতে না যেতেই শুরু হয় ষড়যন্ত্র। করাচিতে শিক্ষা সম্মেলনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।
করাচির শিক্ষা সম্মেলনের খবর ঢাকয় পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে ক্ষোভে ফেটে পড়ে এ দেশের ছাত্র-জনতা। পাকিস্তান সৃষ্টির পর এটাই প্রথম বিক্ষোভ মুসলিম লীগ সরকারের বিরুদ্ধে। ছাত্ররা তখন জিন্নাহর ছবি সরিয়ে ফেলে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে। মাতৃভাষা মায়ের ভাষার মর্যাদার সংগ্রাম অব্যাহত রাখার জন্য আন্দোলন চলতে থাকে সমগ্র দেশজুড়ে।
১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারির ২৩ তারিখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন গণপরিষদের অধিবেশনে বলেন, ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।’ তার এই মন্তব্যে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। প্রতিবাদী শেখ মুজিব অবিলম্বে মুসলিম লীগের এই পূর্ব পরিকল্পিত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরুর সিদ্ধান্ত নেন। ওই বছরের ২ মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এই সম্মেলনে মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নীতিমালা নিয়ে আলোচনা করা হয়, যাতে শেখ মুজিব একটি প্রস্তাব পেশ করেছিলেন। এখান থেকেই সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই পরিষদের আহ্বানে ১১ মার্চ ১৯৪৮ তারিখে ঢাকায় ধর্মঘট পালিত হয়। ধর্মঘট পালনকালে শেখ মুজিবসহ আরও কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মীকে সচিবালয় ভবনের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু ছাত্রসমাজের তীব্র প্রতিবাদের মুখে ১৫ মার্চ শেখ মুজিব এবং অন্য ছাত্র নেতাদেরকে মুক্তি দেওয়া হয়।
দের মুক্তি উপলক্ষে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় র্যালি করে, যাতে শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। পুলিশ এই র্যালি অবরোধ করেছিল। পুলিশি কার্যক্রমের প্রতিবাদে শেখ মুজিব অবিলম্বে ১৭ মার্চ ১৯৪৮ তারিখে দেশব্যাপী ছাত্র ধর্মঘটের ঘোষণা দেন। ১৯৪৯ সালের ১৯ এপ্রিল বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই বছরে জুলাই মাসের শেষে তিনি মুক্তি পান। ১৯৪৯ সালের ১৪ অক্টোবর আর্মানিটোলা ময়দানে জনসভা শেষে বঙ্গবন্ধু ভুখা মিছিল বের করেন (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, কারাগারের রোজনামচা-২০১৭, পৃষ্ঠা-০৫)।
ওই মিছিল থেকে মওলানা ভাসানী, শামসুল হক ও বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফলে স্বাভাবিক কারণেই ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে সম্ভব ছিল না। তবে জেলে থেকেই তিনি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতেন এবং বিভিন্ন পর্যায়ে পরামর্শ দিতেন।
বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ১৯৪৭-৪৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি ছাত্র ও যুব সম্প্রদায়কে ভাষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে তৎপর হন। তাঁর প্রচেষ্টায় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ পুনর্গঠিত করা হয়, যেখানে উপস্থিত থাকেন তমুদ্দিন মজলিশ, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের প্রতিনিধি ও আহ্বায়ক হিসেবে থাকেন শামসুল আলম। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সভায় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দাবিতে ১১ মার্চকে বাংলা ভাষা দাবি দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং সাধারণ ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১১ মার্চের কর্মসূচিকে কিভাবে সফল করা যায় সে উদ্দেশ্যে ফজলুল হক মুসলিম হলে আগের দিন রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ এক সভায় মিলিত হয়। ওই সভায় বঙ্গবন্ধু ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ১১ মার্চ রাজপথে নামার পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন। সকাল থেকেই ঢাকার রাজপথে বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং শুরু হয় এবং সাধারণ ধর্মঘট চলতে থাকে। পুলিশ বেশ কিছুসংখ্যক ছাত্রকে ধরে নিয়ে গাড়িতে করে বহু দূরে জঙ্গলের মধ্যে ফেলে দেয়। বঙ্গবন্ধু ছিলেন ভাষা আন্দোলনের প্রথমপর্বের বন্দিদের মধ্যে অন্যতম। ১১-১৫ মার্চ পর্যন্ত পাঁচদিন তাঁকে কারাগারে কাটাতে হয়।
বঙ্গবন্ধু, শামসুল হক ও বন্দিদের আরও অনেককে কারাগারের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। কারাপ্রাচীর সংলগ্ন বাইরেই ছিল মুসলিম গার্লস হাইস্কুল। স্কুলের ছাত্রীরা প্রতিদিন রাষ্ট্রভাষা বাংলার পক্ষে সেøাগান দিত। এ সম্বন্ধে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু লেখেন, ‘যে পাঁচদিন আমরা জেলে ছিলাম, সকাল ১০টায় মেয়েরা স্কুলের ছাদে উঠে স্লোগান দিতে শুরু করত, আর ৪টায় শেষ করত। ছোট্ট ছোট্ট মেয়েরা একটুও ক্লান্ত হতো না। ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’, ‘বন্দি ভাইদের মুক্তি চাই’, ‘পুলিশি জুলুম চলবে না’ নানা ধরনের স্লোগান। এ সময় শামসুল হক সাহেবকে আমি বললাম, ‘হক সাহেব ওই দেখুন, আমাদের বোনেরা বেরিয়ে এসেছে। আর বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা না করে পারবে না। হক সাহেব আমাকে বললেন, ‘তুমি ঠিকই বলেছ, মুজিব’। (অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃ. ৯৩-৯৫)।
ভাষা আন্দোলন রুখে দিতে সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি সকল ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও তার আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। তবুও থেমে যায়নি বলিষ্ঠ সেই সংগ্রাম এবং ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করেই জন্ম হয় ভাষা শহীদ দিবসের। পুলিশের গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার এবং শফিউর ছাড়াও আরও অনেকে শহীদ হয়েছিলেন সেই ভাষা আন্দোলনে। ধর্মঘটের সময় পুলিশের লাঠিচার্জে অনেক ছাত্র আহত হন এবং অনেকে গ্রেফতার হন। তবুও এই হত্যাকা- মাতৃভাষার অধিকারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনকে দমিয়ে দিতে পারেনি।
শহীদদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়ে ওঠে। শোকাবহ এ ঘটনার অভিঘাতে সমগ্র পূর্ব বাংলায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ২১ ফেব্রুয়ারিতে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে বিদ্রোহের আগুন দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি ছাত্র, শ্রমিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক ও সাধারণ জনতা পূর্ণ হরতাল পালন করে এবং সভা-শোভাযাত্রাসহ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে। ২২ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহীদ হন শফিউর রহমান শফিক, রিক্সাচালক আউয়াল এবং অলিউল্লাহ নামক এক কিশোর। ২৩ ফেব্রুয়ারি ফুলবাড়িয়ায় ছাত্র-জনতার মিছিলেও পুলিশ অত্যাচার-নিপীড়ন চালায়।
এ নির্লজ্জ, পাশবিক পুলিশি হামলার প্রতিবাদে মুসলিম লীগ সংসদীয় দল থেকে সেদিনই পদত্যাগ করেন। ভাষা আন্দোলনের শহীদ স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার জন্য মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে রাতারাতি ছাত্রদের দ্বারা গড়ে ওঠে শহীদ মিনার, যা ২৪ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করেন শহীদ শফিউর রহমানের পিতা। ২৬ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দীন। এভাবেই ভাষা শহীদরা আমাদের প্রিয় মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করে।
জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক বাংলাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃত এবং ২০১০ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এখন থেকে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হবে’ প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। আর এভাবেই বাংলা ভাষার বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া চলমান।
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে টঘঊঝঈঙ কর্তৃক বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি বিশ্বদরবারে এনে দিয়েছে এক বিশাল খ্যাতি। ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে বিশ্বজুড়ে অমর একুশের উদ্্যাপন নিঃসন্দেহে এক বিশাল জাতীয় গৌরব ও সম্মানের। ২০০০ সাল থেকে টঘঊঝঈঙ-এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো এ দিবসটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করে।
বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলন করেছিলেন ভাষার চেতনাকে বুকে ধারণ করে। তাঁর চিন্তা-চেতনায় ছিল মাতৃভাষার মর্যাদা ও স্বীকৃতি বিধানের দৃঢ় সংকল্প। বাঙালিদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র বিনির্মাণে সংগ্রামে এ চেতনা ছিল সর্বদা জাগ্রত। এ ব্যাপারে তিনি ছিলেন আপোসহীন, কঠোর। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ সাল এই কালপর্বে সংঘটিত হয় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই গোটা সময়ই রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন- কখনো মুক্ত থেকে অথবা কারাগারে অন্তরীণ অবস্থায়।
বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দানের জন্য যে সংগ্রাম সূচিত হয় তার সঙ্গে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সুগভীর সম্পর্ক। কেননা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারীরা এ আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। সময়ের আবর্তে শুধু বাংলাদেশ নয়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করছে সারাবিশ্ব। যার গৌরব শুধুই এ বাঙালি জাতির। ভাষা শহীদ ও ভাষা সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের লক্ষ্যে প্রতিবছর মহান ভাষার মাসের শুরুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গ্রহণ করা হয় পদযাত্রাসহ নানামুখী আয়োজন।
প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নানাভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় ভাষা সৈনিকদের প্রতি। ভাষা আন্দোলনের প্রভাব বাংলার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসের প্রতিটি পাতায় প্রত্যক্ষ করা যায়। যার সার্থক ফসল আজকের এ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
লেখক : ট্রেজারার, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়